কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধেপর্যটককে রুমে আটকে বেদম মারধরের অভিযোগ
সমকাল
‘কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গিয়েছিলেন নাজমুল হাসান। ভোরের উত্তাল ঢেউ ও মিষ্টি রোদ উপভোগের আশায় সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে নামলে হয় তিক্ত অভিজ্ঞতা। এক পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে ধরে নিয়ে যান। আড়াই ঘণ্টা রুমে আটকে করেন বেদম মারধর। হাতে-পায়ে ধরে ছাড়া পেলেও দিতে হয়েছে সাদা কাগজে সই।’ এমন গুরুতর অভিযোগ উঠেছে পর্যটকের নিরাপত্তায় নিয়জিত খোদ ট্যুরিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলে ওই ঘটনার লিখিত বর্ণনা দিয়েছেন নাজমুল। অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ।
জানা গেছে, কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার গুলজারনগর এলাকার আবদুস সালামের ছেলে নাজমুল তাঁর ভাতিজা মো. শান্তকে নিয়ে বুধবার ভোরে কক্সবাজারে পৌঁছেন। ওঠেন কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের হোটেল ড্রিম গেস্টহাউসে। একটু বিশ্রাম নিয়ে সাড়ে ৫টায় সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হন নাজমুল ও শান্ত। এ সময় কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসআই আমজাদ হোসেন তাঁদের গতিরোধ করেন; নিয়ে যান ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ের একটি রুমে। ‘মোটরসাইকেল নিয়ে সৈকতে নেমেছিস কেন’ বলেই শুরু করেন লাঠি দিয়ে মারধর। বারবার মাফ চেয়ে এবং ভুল পেলে মামলা দেওয়ার আকুতি জানালেও তা কানে তোলেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা। পরে একটি সাদা কাগজে দু’জনের স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন। আহত নাজমুল স্থানীয়দের পরামর্শে গতকাল অভিযোগ দেন। নাজমুল বলেন, সৈকতে যে কোনো সমস্যায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পর্যটকদের পাশে দাঁড়ানোর কথা থাকলেও আমাদের চোর-ডাকাতের মতো পেটানো হয়েছে। সাদা কাগজে সই এবং পুলিশি নির্যাতনের ভয়ে ভবিষ্যতে কক্সবাজারে আসতে হলে দশবার ভাবতে হবে।
নাজমুলদের ধরে কার্যালয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করে এসআই আমজাদ বলেন, ওই পর্যটককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁকে কোনো মারধর করা হয়নি। তবে তাঁর সঙ্গে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, তা আমরা নিষ্পত্তি করে নিয়েছি। এ বিষয়ে উভয়ের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের কর্মকর্তা মাসুম বলেন, পর্যটককে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁরা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমানকে একাধিকবার কল করেও তাঁর লাইন পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্তৃক পর্যটককে মারধরের অভিযোগটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষী প্রমাণ হলে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুত্রঃ সমকাল