সমকাল
স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের পর্যটন। গোলাগুলি ও টিয়ার শেলের ক্ষত মুছে দর্শনার্থীদের পদচারণায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে পর্যটন নগরী। দীর্ঘ এক মাস পর হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীদের মুখে এখন হাসি। খুলেছে দোকানপাট, গতি পেয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক বিক্ষুব্ধ পরিবেশ ছিল। গোলাগুলি ও টিয়ার শেলের আতঙ্কে বেশ কিছুদিন পর্যটক না থাকায় ব্যবসা স্থবির হয়ে পড়ে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বর্তমানে পর্যটকের খরা কেটে গেছে।
শনিবার সকাল থেকে সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবনী পয়েন্টে পর্যটক নামতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল থেকে কলাতলী থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সৈকতে অন্তত ২০ হাজার দর্শনার্থী নামে। সৈকতে ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। অনেকেই সাগরের নোনাজলে গোছলে নামে, ঘোড়ায় চড়ে সমুদ্র উপভোগ করে। কেউ আবার ওয়াটার বাইক ও বিচ বাইকে সৈকতে দাপিয়ে বেড়ায়। আবার কেউ কিটকটে (চেয়ার-ছাতা) গা এলিয়ে দিগন্তছোঁয়া নীল জলরাশিতে মজেন।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী ফজলে ওমর সাগরে নামেন স্ত্রী ও স্কুলপড়ুয়া দুই সন্তানকে নিয়ে। কোমর সমান পানিতে ভাসেন টিউবে। আধাঘণ্টা পর বালুচরে উঠে বসেন কিটকটে। মোহাম্মদ আরিফ নামে আরেক পর্যটক বলেন, নোনাজলে শরীর ভেজাতে সপরিবারে কক্সবাজারে ছুটে আসা।
সৈকতে বিচকর্মীদের সুপারভাইজার বেলাল উদ্দিন ও মাহবুবুর রহমান বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শুক্রবার সকাল থেকে পর্যটকরা সৈকতে আসতে থাকেন। শনিবারই অন্তত ২০ হাজার পর্যটক সৈকতে উপস্থিত হন।
পর্যটকদের আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে এজন্য প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার বলেন, শুক্রবার ও শনিবার কক্সবাজারে প্রায় ৫০ শতাংশ কক্ষ ইতোমধ্যেই বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়ার প্রত্যাশা করেন তিনি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, পর্যটকদের যাতে নিরাপত্তার ঘাটতি না থাকে এবং অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে না হয়, সে জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটা টিম কাজ করছে।