চলন্ত বোট থেকে সাগরে ঝাপ দিয়ে গৃহবধুর আত্মহত্যার চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারের মহেশখালীতে পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রবাসী স্বামীর সাথে অভিমান করে চলন্ত নৌকা থেকে সাগরে ঝাপ দিয়ে উর্মী ফারজানা তুলি (২০) নামের এক গৃহবধু আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে।
গতকাল রবিবার রাত ৯টার দিকে মহেশখালী-কক্সবাজার নদীপথে মহেশখালী চ্যানেলের বাঁকখালীর মোহনায় এ ঘটনা ঘটে।
তুলি মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের মোহরা কাটা গ্রামের মোস্তাক আহমদের মেয়ে এবং উপজেলার কুতুবজুম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা গ্রামের মৃত রহমত আলীর পুত্র দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সন্ধ্যার পরে মহেশখালী জেটিঘাট থেকে ১১জন যাত্রী নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একটি যাত্রীবাহী ডেনিশ বোট বাঁকখালী নদীর মোহনায় গেলে বোরখা পরিহিত আনুমানিক ২০ বছরের এক অজ্ঞাত নারী হঠাৎ চলন্ত বোট থেকে সাগরে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকে নদী থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতলে নেওয়া হয়। এ সময় তার পরিচয় পাওয়া না গেলেও তার ভ্যানিটি ব্যাগে মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ জাকের হোছন রাজু’র একটি ভিজিটিং কার্ড পাওয়া গেছে।
গ্রাম পুলিশ জাকের হোছন রাজু জানান, গত ১১ মাস পূর্বে ঘটি ভাঙ্গা গ্রামের মৃত রহমত আলীর পুত্র দেলোয়ার হোসেনের সাথে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরে দেলোয়ার স্ত্রী উর্মি ফারজানা তুলিকে বাবার বাড়িতে রেখে মালয়েশিয়া চলে যায়। স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকে স্বামী ও শ্বাশুরির সাথে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এ বিষয়ে কুতুব জুম ইউনিয়ন পরিষদের জনৈক ইউপি সদস্যের নিকট বিচার দিয়েও কোন সুরাহা না হওয়ায় মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।
গতকাল সন্ধ্যার পরে সে বাবার বাড়ি থেকে একা বের হয়ে মহেশখালী জেটি ঘাটে গিয়ে কক্সবাজারের বোটে উঠে। এ সময় সে তার ছোট ভাই জাহেদ এর ফেইসবুক আইডির মেসেঞ্জারে মেসেজ দিয়ে বোট থেকে সাগরে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
মেসেজে সে লিখেছে, আমার মৃত্যুর জন্য আমার স্বামী ও তার মা বোন এবং বোনের জামাই দায়ী। ওরা আমার গায়ে পেট্রোল ঢালছে, আমার বাচ্চা নষ্ট করেছে, তাই আমি পৃথিবীকে বিদায় জানালাম। আমি তাদের শাস্তি চাই। ভাইয়ের উদ্দেশ্যে সে লিখেছে, তোরা আমাকে অবহেলা করছোস, আমাকে ভুল বুঝেছ, তোরা ভালো থাকিস, দেখা হবে হাশরের মাঠে। এর পরপরই মেয়েটি বোট থেকে নদীতে ঝাঁপ দেয়। ভোটের যাত্রীরা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে বলে জানা গেছে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে বলে জানা গেছে।