টেকনাফের মেরিনসিটি হাসপাতালের এক পরিচালকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
নিউজ ডেস্কঃ
টেকনাফ মেরিন সিটি হাসপাতালের পরিচালনা কমিটির সদস্য হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে নাফিসা খানম নামের হাসপাতালে কর্মরত এক নার্স। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে গেল ফেব্রুয়ারী মাসে লিখিত অভিযোগ জানায়। তবে মাস পার হয়ে গেলেও ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পরিচালনা পরিষদের সদস্য হেলাল উদ্দিন টাকার প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানী করত নিয়মিত।
এ বিষয়ে নাফিজা খানম সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি বরাবরও লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের একটি কপি নিউজ কক্সবাজারের হাতে এসেছে।
অভিযোগে নাফিজা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মেরিন সিটি হাসপাতালে নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। হেলাল একজন নারী লোভী প্রকৃতির মানুষ এবং টাকার প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক প্রস্তাব প্রদানকারী ব্যক্তি। কিছুদিন আগে রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ টার সময় ফোনে কল দিয়ে তার সাথে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়, তার কুমতলব বুঝতে পেরে এ প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় আমার বেতন বাড়িয়ে দিবে বলে লোভে বশীভূত করার চেষ্টা করে। এর পরেও আমি রাজি না হওয়াতে প্রতিনিয়ত ফোনে কল দিয়ে আমাকে বিরক্ত করতে থাকে। এরপর তার সকল ফোন নাম্বার ব্লক করে দিলে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ডিউটিরত অবস্থায় সবার সামনে আমাকে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এমনকি আমার অজান্তে সে আমার ছবি তোলে বিভিন্ন মানুষের কাছে শেয়ার করে আমার মানহানি করার চেষ্টা করে। দীর্ঘদিন থেকে সে আমার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করার জন্য চেষ্টা করে আসছিল। এর আগেও সে অন্যান্য নার্সদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক করার চেষ্টা করার কথাও হাসপাতালের সবাই জানে।
সুস্থ তদন্তপূর্বক ন্যায় বিচার পাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার আশায় সাবেক এমপি বরাবর অভিযোগে উল্লেখ করেন।
হেলাল উদ্দিন নিউজ কক্সবাজার কে জানান, নাফিজা খানম আমার দূর সম্পর্কে চাচতো বোন। একটা চাকরি ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আমাকে প্রতিনিয়ত অনুরোধ করেন। আমি তার অনুরোধের ভিত্তিতে হাসপাতালে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিই। দায়িত্বরত অবস্থায় সে মোবাইল ফোনে অডিও ভিডিও কলে ব্যস্ত থাকার অভিযোগ পাই এবং এই দৃশ্য ধারণ করে অন্য নার্সরা আমাকে পাঠায়। আমি এই বিষয়ে তাকে সতর্ক করি। দায়িত্বরত অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা না বলার জন্য নিষেধ করি।তাতেও কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
চাকরিতে থাকা অবস্থায় সে আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করে নাই। একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত। তারাই নাফিজাকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলেও দাবি করেন হেলাল।
হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুজ্জামান জানান, নাফিসার চাকরি হেলালের সুপারিসে হয়েছে এটা সত্য। তবে নাফিসা এখনো হাসপাতালে কর্মরত আছেন এবং পরিচালক হেলালের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগটি চেয়ারম্যানকেও অবহিত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সেটা তদন্ত করছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের চেয়ারম্যান কহিনুর আক্তার ( পৌর কাউন্সিল) নিউজ কক্সবাজারকে জানান, এই হাসপাতালটি মুলত একটি জনসেবামুলক প্রতিষ্ঠান। আমার দায়িত্বকালে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি রোগিদের সেবা দিতে। তবে এ অভিযোগ আমার কাছে এসেছে এবং আমরা তদন্ত করে এর ব্যবস্থা নিব।