সমকাল
কক্সবাজারে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে আলোচিত সাবেক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজারছড়া এলাকায় তার নামে চারপাশে বাউন্ডারি ঘেরা ৩৩ শতক জমি রয়েছে। এ জমির বর্তমান বাজার মূল্য কোটি টাকা।
এদিকে সাবেক ডিবিপ্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া তার ও স্ত্রী শিরিন আক্তারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
স্থানীয় ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, টেকনাফ মৌজার ৭৪৬৮ নম্বর খতিয়ানের ১০৪৭৫ দাগে ৮ শতাংশ এবং ১০৪৭৩ দাগে ২৫ শতাংশ জমি আছে হারুন অর রশিদের নামে। এছাড়া ১৭২৫ দাগে আছে ২২ শতাংশ জমি। ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে মোহাম্মদপুর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পশ্চিম আগারগাঁও উত্তর অংশ, যার হোল্ডিং নম্বর ১২০৭। তার জমির খতিয়ানের নামজারি ও জমাভাগ মামলা নম্বর ছিল ২৪৪২ (আই)/২০২১-২২ এর ৩১/০১/২০২২ তারিখের আদেশমতে অত্র খতিয়ান সৃজন করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়। জমির বিক্রেতা ছিল টেকনাফের হাতিয়ারগুলা নেঙ্গুরবিলের আবদুল হাকিম, সাবরাংয়ের চান্দলী পাড়ার সোনা আলী, হাবিয়া খাতুন ও আবদুস সালাম।
খতিয়ানটি সত্যায়ন করেছেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা সহকারী ভূমি এরফানুল হক চৌধুরী এবং উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো দেলাওয়ার হোসাইন ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন। খতিয়ানটিতে দেখা যায়, হারুন অর রশিদের মালিকানাধীন মোট জমির পরিমাণ ৩৩ শতাংশ। জমিটির বর্তমান বাজার মূল্য কোটি টাকা।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুলিশের শীর্ষ পদে থাকার সময় অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। কীভাবে প্রভাব বলয় ব্যবহার করে এত সম্পদ অর্জন করেছেন, তা আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসছে। শুধু হারুন অর রশিদ নয়; আরও অনেক সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের নামে বেনামে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ ও সেন্টমার্টিনে কোটি কোটি টাকার অবৈধ টাকায় সম্পত্তি কেনার অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফের সদর ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট এলাকায় মেরিন ড্রাইভের তীরে গেট দিয়ে চারপাশে বাউন্ডারি জমি ঘেরা দেওয়া হয়। এ জমির তত্ত্বাবধায়ক মোস্তাক মিয়া নামে একজন ব্যক্তিকে পাওয়া গেছে। তবে জমিটি এক বিএনপি নেতার তত্ত্বাবধানে রয়েছে বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে।
জমির বিষয়ে মোস্তাক মিয়া বলেন, ‘এ জমি ডিবি হারুনের। গত চার মাস ধরে এটা আমি দেখভাল করছি। আমি ছাড়া স্থানীয় মো. রাাসেলসহ এক বিএনপি নেতাও এটি দেখাশোনা করেন।’
টেকনাফে ডিবি হারুনের জমির বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফফাত আলী বলেন, ‘ডিবির হারুনের সম্পদের হিসাব চেয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চিঠি পাইনি।’